ভূমিকা
হোন্ডা এসপি ১২৫ (Honda SP 125) বর্তমান যুগে একটি উন্নত আধুনিক এবং ফুয়েল ইফিশিয়েন্ট বাইক, এই বাইক প্রতিদিনের ব্যবহার যোগ্য ও প্রতি এক লিটারে ৬০ – ৬৭ চলবে। হোন্ডা বিশ্বাস যোগ্যতা একটি কোম্পানি এবং উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে সব সময় আপডেট থাকে হোন্ডা। মধ্যবিত্তদের জন্য সেরা বাইক মডেল এই হোন্ডা এসপি ১২৫।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা হোন্ডা সাইন এসপি ১২৫ বিএস ৬ (Honda Shine SP 125) বাইকটির ডিজাইন, ইঞ্জিন, পারফরমেন্স, মাইলেজ (honda sp 125 mileage), ফিচার,হোন্ডা এসপি দাম কত (Honda SP 125 Price) এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। পুরো বাংলা ভাষায় সম্পূর্ণ পরে আপনি হোন্ডা এসপি ১২৫ বাইক সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে চলেছেন আকজের শেষ পর্যন্ত থাকুন ।
বিষয়বস্তু | বিবরণ |
---|---|
মডেল নাম | Honda SP 125 BS6 |
ইঞ্জিন প্রকার | 124cc, 4-stroke, SI, BS6-compliant |
মাইলেজ (প্রায়) | 65 কিমি/লিটার |
পাওয়ার (শক্তি) | 10.8 PS @ 7500 RPM |
টর্ক (Torque) | 10.9 Nm @ 6000 RPM |
জ্বালানি সিস্টেম | Fuel Injection (PGM-FI) |
ট্রান্সমিশন | 5-গিয়ার |
ব্রেক প্রকার | সামনের ব্রেক: ডিস্ক/ড্রাম, পিছনের ব্রেক: ড্রাম |
সাসপেনশন | সামনের: টেলিস্কোপিক ফর্ক, পিছনের: হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্ভার |
ফুয়েল ট্যাংক ধারণক্ষমতা | 11 লিটার |
ডিজিটাল ডিসপ্লে | হ্যাঁ (ফুল ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার) |
হেডলাইট | LED হেডলাইট |
ওজন (কর্ব ওয়েট) | 116 কেজি (ড্রাম), 118 কেজি (ডিস্ক) |
চাকা প্রকার | অ্যালয় হুইল |
চাকা সাইজ | সামনে: 80/100-18, পিছনে: 80/100-18 |
স্টার্টিং অপশন | ইলেকট্রিক ও কিক স্টার্ট |
রঙের অপশন | কালো, নীল, লাল, গ্রে |
দাম (প্রায়) | ₹ 87,000 – ₹ 92,000 (এক্স-শোরুম) |
বিশেষ বৈশিষ্ট্য | eSP টেকনোলজি, ACG সাইলেন্ট স্টার্ট, ইকোনোমি ইন্ডিকেটর |
Honda SP 125 বাইকের ডিজাইন
হোন্ডা এসপি ১২৫ (Honda SP 125) এর ডিজাইন অত্তন্ত আধুনিক ও স্টাইলিশ ভাবে ডিজাইন করেছে। কম দামের মধ্যে এমন বাইক এখন নেই বললে চলে। হোন্ডা এসপি পুরাতন ডিজাইন (Honda SP 125 Old Model) থেকে এখন কার মডেল আরো সুন্দর করেছে।
- বডি ডিজাইন:
বাইক টার প্রায় ৮০ % বডি মেটাল দিয়ে তৈরি করেছে। সামনের ও পেছনের মাডগার ফাইবার দিয়ে বানিয়েছে এবং এতটাই মজবুত সহজে ভেঙ্গে যাবেনা। হোন্ডা এসপি ১২৫ (Honda SP 125) বাইকের ওজন প্রায় ১১৭ কেজি (ড্রাম ভ্যারিয়েন্ট) এবং ১১৮ কেজি (ডিস্ক ভ্যারিয়েন্ট)। এটি স্পোর্টি লুক এবং শার্প কভার দিয়ে সজ্জিত।
- হেডলাইট:
এলইডি হেডলাইট এবং ডিআরএল লাইট যোগ করা হয়েছে, যা রাতের খুব সুন্দর আলো দেয়। গ্রামের খোলা রাস্তায় ও শহরের অলিগলিতে যা কোনো রকম সমস্যা হয়না। কুয়াশায় মধ্যে খুব একটা অসুবিধা হয়না , ৪টি হেলজিন ইন্ডিকেটর দেয়া আছে এই হোন্ডা সাইন এসপি ১২৫ (Honda Shine SP 125 ) তাই লাইট খুব সুন্দর যা রাতে পরিষ্কার ভিউ দেয়।
- গ্রাফিক্স:
বাইকের ট্যাংক, সাইড প্যানেল এবং ফ্রন্ট শিল্ডে গ্রাফিক্স ডিজাইন চোখ ধাঁধানো মত । হোন্ডা সব সময় প্রিমিয়াম কোয়ালিটি গ্রাফিক্স ব্যবহার করে (Honda SP 125 BS6 Colours) কালার অপশন আরো ভালো পাওয়া যায় যা বাইটিকে আরো অত্যন্ত সুন্দর করে তোলার।
- বিল্ড কোয়ালিটি:
বাইকের বডি মেটেরিয়াল মজবুত এবং দীর্ঘস্থায়ী। হোন্ডা বাইকটির সাসপেনশন এবং চেসিস ডিজাইন খুবই উন্নত যা বাইক চালানোর সময় কোনো অসুবিধা হয়না হাতের বা কোমরে তেমন কোনো সমস্যা হয়না।
Honda Sp 125 ইঞ্জিন এবং পারফরমেন্স
হোন্ডা এসপি ১২৫ সিসি (Honda SP 125) এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অত্যন্ত উন্নত। এক সিলিন্ডার, এয়ার-কুলড ইঞ্জিন রয়েছে এর জন্য ইঞ্জিন খুব সহজে গরম হয়না। এই ইঞ্জিনটি FI (ফুয়েল ইনজেকশন) প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত, যা উন্নত ইঞ্জিন কার্যকারিতা এবং ভালো মাইলেজ প্রদান করে।
Honda SP 125 । হোন্ডা এসপি ১২৫
- ইঞ্জিন টাইপ:
এক সিলিন্ডার, এয়ার-কুলড ইঞ্জিন ১২৪ সিসি বিএস৬ কমপ্লায়েন্ট ইঞ্জিন এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ইঞ্জিন। BS6 (Bharat Stage 6) নির্গমন মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার ফলে এটি পরিবেশ বান্ধব এবং কম দূষণ সৃষ্টি করে।
- পাওয়ার:
১০.৮ পিএস (পোন পাওয়ার) @ ৭৫০০ আরপিএম এটি নির্দেশ করে যে, বাইকটি ৭৫০০ আরপিএম (রেভোলিউশনস পার মিনিট) গতিতে সর্বোচ্চ ১০.৮ পিএস শক্তি উৎপন্ন করে। এই শক্তি বাইকটির দ্রুত ত্বরণ এবং উচ্চ গতির সক্ষমতা নিশ্চিত করে।
- টর্ক:
এটি বাইকের ইঞ্জিনের শক্তি পরিমান ও গাড়িটির উচ্চ গতির জন্য ব্যবহার করা হয়। এই হোন্ডা এসপি ১২৫ (Honda SP 125) এর ১০.৯ এনএম @ ৬০০০ আরপিএম আছে যখন ইঞ্জিন ৬০০০ আরপিএম এ পৌঁছায়, তখন এটি বাইকটিকে আরও দ্রুত গতিতে ত্বরণ নিতে সহায়তা করে যার কারণে হোন্ডা সাইন এসপি ১২৫ (Honda Shine SP 125) এর সর্বোচ্চ গতি হলো প্রায় ১১০ কিমি/ঘণ্টা।
- ফুয়েল সিস্টেম :
হোন্ডা এসপি তে উন্নত মানের ফুয়েল ইনজেকশন (FI) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে , যা বিএস৬ কমপ্লায়েন্ট ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়। এর কারণে ইঞ্জিনে জ্বালানি খুব সুন্দর ভাবে প্রবেশ করে যার কারণে ইঞ্জিন ঠান্ডা থাকে ও (FI) সিস্টেম আশার কারণে এখন পরিবেশ দূষণ অনেকটা কমে গিয়েছে।
- গিয়ারবক্স:
হোন্ডা সাইন এসপি ১২৫ (Honda Shine SP 125) মোট ৫ টি গিয়ারবক্স আছে। প্রথম জিয়ার নিচে তারপর হালকা একটু উপরের দিকে চাপ দিলে (N) নিউট্রাল হবে তার উপরে একটু চাপ দিলে ২ – ৫ নাম্বার গিয়ারবক্স আছে যা বাইক চালানোর সময় খুব কমপোটেবল প্রদান করে।
আপনার প্রিয় বাইক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ধারাবাইক.কম ব্লগ সেরা জায়গা। বাইকটির দাম, ইঞ্জিন ক্ষমতা, মাইলেজ এবং আরও অনেক কিছু জানুন এক প্ল্যাটফর্মেই।
🏸 হোন্ডা শাইন বাইক কেমন? বিস্তারিত রিভিউ ২০২৫
Honda Sp 125 মাইলেজ
হোন্ডা এসপি বাইক টি মাইলেজের দিক থেকে অত্যন্ত কার্যকর। গাড়ি চালানোর উপর নির্ভর করে গাড়ি তেল সার্ভিস কেমন দেবে। এতই কম দামের মধ্যে এমন মাইলেজ গাড়ি পায় এখন অনেক মুস্কিল আছে। হোন্ডা সাইন এসপি ১২৫ (Honda Shine Sp 125 ) বাইক টাতে বড় ফুয়েল ট্যাংক দিয়েছে। সব মিলিয়ে খুব অসাধারণ বাইকটা।
- মাইলেজ:
বাইক চালানোর উপর নির্ভর করে বাইক কেমন মাইলেজ দেবে, তাই বাইক চালানোর সময় সব ঠিক ঠাক মেনটেন্ট করলে। হোন্ডা এসপি বাইকটি মোটামুটি ৬৫-৭০ কিমি/লিটার মাইলেজ দিয়ে দেবে।
- ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি:
বাইকে ফুয়েল ট্যাংক একটু বড়ো নাহলে ভালো হয় কি করে। এই হোন্ডা সাইন এসপিতে (Honda Shine SP 125 ) ১১ লিটার ফুয়েল ট্যাংক কেপাসিটি দিয়েছে। লং ড্রাইভ যাবার জন্য খুব ভালো।
- রিজার্ভ ক্যাপাসিটি:
রিজার্ভ ক্যাপাসিটি বুঝতে সাহায্য করে যে, প্রধান ট্যাংকে কতটুকু জ্বালানি অবশিষ্ট আছে এবং সেই জ্বালানিতে পেট্রল পাম্প পর্যন্ত যাওয়া যাবে কিনা । হোন্ডা এসপি ১২৫ (Honda Sp BS6 125 ) বাইকটিতে ১.৫ লিটার রিজার্ভ ক্যাপাসিটি দিয়েছে যা আপনি মোটামুটি ৯৫ কিমি যেতে পারবেন যা খুব ভালো।
ফিচার এবং টেকনোলজি
হোন্ডা এসপি ১২৫ ( Honda SP 125 ) বাইকটিতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি এবং ফিচার আছে। একটি আধুনিক এবং জ্বালানি-দক্ষ মোটরসাইকেল, যা উন্নত ফিচার এবং টেকনোলজি দিয়ে তৈরি। এটি শহুরে এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য একটি আদর্শ বাইক। এর ফিচার এবং প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে উন্নত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
Honda SP 125 । হোন্ডা এসপি ১২৫
- ডিজিটাল কনসোল:
সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার কনসোল ফিচার দিয়েছে, যেখানে গিয়ার পজিশন, ফুয়েল ইন্ডিকেটর, মাইলেজ, ঘড়ি, গতিবেগ মাপা মিটার, পাওয়ার ও টর্ক দেখা যায় পুরো ডিজিটাল করে তলে।
- ইঞ্জিন কাট-অফ সুইচ:
সেফটি ফিচার হিসেবে ইঞ্জিন কিল সুইচ এখন প্রায় সব বাইকে দেখা যায়। হোন্ডা সাইন এসপি ১২৫ (Honda Shine SP 125 ) এমন যায় জায়গায় দেয়া আছে বিপদ কালীন সময় আপনি খুব সহজে ইঞ্জিন কিল সুইচ চাপতে পারবেন।
- সাইলেন্ট স্টার্ট:
ACG (Alternating Current Generator) স্টার্টার মোটর মূলত বাইকের ইঞ্জিন চালু করার সময় ব্যবহৃত হয়। এই সাইলেন্ট স্টার্ট অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ব্যবহার করেছে কোম্পানি। এই সাইলেন্ট স্টার্ট কারণে খুব কম শব্দ বাহিরে প্রবেশ করে ও জ্বালানি খরচ অনেক করে।
- সাসপেনশন:
সামনে টেলিস্কোপিক এবং পেছনে হাইড্রোলিক সাসপেনশন দিয়ে তৈরি। আপনি যত খারপ রাস্তায় জাননা কেন ভাইব্রেসন বা ঝাটকা লাগলে আপনার মনে হবে না বাইক স্মোথলি চলবে ।
- ব্রেকিং সিস্টেম:
হোন্ডা সাইন এসপি বিএস ৬ ১২৫ (Honda Shine SP BS 6 125) দুটি ভেরিয়েন্ট আছে। সামনে ড্রাম ও পেছনে ড্রাম ব্রেইকিং সিস্টেম আছে। আরো একটা ভেরিয়েন্ট সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে ড্রাম ব্রেক দিয়ে বাইকটি ব্রেকিং সিস্টেম আরো অসাধারণ করেছে।
মনে রাখবেন বাইক চালানোর সময় নিজের সেফটি নিজের কাছে রাখবেন নইলে বিপদ হতে পারে । এই ব্লগ পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো নিচের কমেন্ট বাক্স আছে জানিয়ে যাবেন। বাংলায় বাইকের রিভিউ পেতে প্রতিদিন ভিসিট করুন ও ব্লগটি শেয়ার করে আমাদের পশে থাকুন।
🏸 হোন্ডা শাইন বাইক কেমন? বিস্তারিত রিভিউ ২০২৫
রাইডিং অভিজ্ঞতা
হোন্ডা এসপি ১২৫ সিসি (Honda SP 125 cc) বাইকটি রাইডারদের জন্য আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দেয়। এই বাইকটিতে গ্রামের রাস্তায় ও শহরের গলি সব জায়গায় কাফেটেবেল। LED DRL হেডলাইট, ব্রেকিং সিস্টেম,হ্যান্ডলিং, MRF টাওয়ার দিয়ে বাইকটা পার্ফমেশ আরো সুন্দর করে তোলে।

- সিট কমফোর্ট:
প্রশস্ত এবং আরামদায়ক সিট। নরম তুলতুলে সিট আপনি দীর্ঘক্ষণ বসে রাইডিং করলে আপনার কামড়ে কোনো ব্যথা করবেন , পেছনে যদি কেউ বসে থাকে তার কোনো সমস্যা হবে না এমনি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি সিট দিয়েছে হোন্ডা এসপি ১২৫ (Honda SP 125) সে।
- হ্যান্ডলিং:
সহজ হ্যান্ডলিং এবং লম্বায় বেশ বড় আছে কম হাইটের রাইডার দের জন্য আরো ভালো এই এসপি ১২৫ (SP 125) বাইকটি।
- ওজন:
প্রায় ১১৮ কেজি, যা হালকা এবং ম্যানেজেবল। মোটামুটি ৭০ – ৮০ কিমি বেগে বাইকটি চালালে তেমন একটা ভিব্রাসন মনে হয় না।
- দাম :
ড্রাম ব্রেক ভ্যারিয়েন্ট: ৯০,০০০ টাকা (এক্স-শোরুম)।
ডিস্ক ব্রেক ভ্যারিয়েন্ট: ৯৫,০০০ টাকা (এক্স-শোরুম)।
আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না এবং বাইকটি কিনতে চাইলে নিকটস্থ শোরুমে যোগাযোগ করুন।
5 thoughts on “Honda SP 125 বাইক সম্পূর্ণ এ টু জেড রিভিউ”